আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা যখন অপরাধীদের আগুনে নিক্ষেপ করবেন তিনি বলবেন- ইখসাউ ফিইহা ওয়ালা তুকাল্লিমুন- اخۡسَـُٔوۡا فِیۡهَا وَ لَا تُکَلِّمُوۡنِ - ‘তোমরা ধিকৃত অবস্থায় এখানেই পড়ে থাক, আমার সঙ্গে কোন কথা বল না।’ (২৩:১০৮)
তাদের আল্লাহর সাথে কথা বলার আর সুযোগ থাকবে না। কুরআনে দেখবেন অধিকাংশ সময় আগুনের অধিবাসীরা আল্লাহর সাথে কথা বলে না। তারা কথা বলে জাহান্নামের রক্ষকদের সাথে।
তারা জাহান্নামের ফেরেশতা মালেককে বলবে, ও মালেক! আপনার রবকে বলুন আমাদের শাস্তি শুধু এক দিনের জন্য কমিয়ে দিতে। এমনকি শাস্তি কমিয়ে দেওয়ার কথাও তারা সরাসরি আল্লাহকে বলতে পারবে না। কারণ, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা এমনকি তাঁকে ডাকার ক্ষমতাও তাদের কাছ থেকে কেড়ে নিবেন।
এই দুনিয়াতে সবার চান্স্ আছে তাঁর নিকট সরাসরি কিছু চাওয়ার। যদি আপনি এখন এই দুনিয়াতে এ সুযোগ মিস করেন, তাঁর কাছে চাওয়ার এই সুযোগ, তবে পরকালে তাঁর নিকট চাওয়ার সুযোগ থেকে আপনি বঞ্চিত হবেন।
(তাই তাঁর নিকট বেশি বেশি মাফ চান, নিজের ভাষাতেই কাকুতি-মিনতি করে মাফ চান। জাহান্নামের আগুন থেকে নাজাত চান এবং জান্নাত চান। আল্লাহুম্মা ইন্নি আস আলুকাল জান্নাতা ওয়া আউজুবিকা মিনান নার। অর্থাৎ ও আল্লাহ আমি আপনার কাছে জান্নাত চাই আর জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চাই।)
কারণ, এই জগতে তারা আল্লাহর কাছে সরাসরি চায় নি। পরের জগতে তাদেরকে আর সুযোগ দেওয়া হবে না। তাদের বলে দেওয়া হবে আমার সঙ্গে কোন কথা বল না।’ দোজখের অধিবাসীরা তখন শুধু আগুনের ফেরেশতা মালেককে বলতে পারবে। কিন্তু, উনি তাদের পক্ষ হয়ে আল্লাহর কাছে এমনিতেই কিছু চাইবেন না।
তাই, আমি বলতে চাচ্ছি, কুরআন আসলেই এসেছে একটি করুণা হিসেবে। বিষয়টা এতোই ভয়াবহ যে কারো পক্ষে কল্পনা করাও সম্ভব নয়।
সেদিন আসার পূর্বে এখন আপনার হাতে সময় আছে। যারা ইতোমধ্যে মারা গেছে চিরকালের জন্য তাদের সে সুযোগ চলে গেছে। কিন্তু, আমাদের হাতে এখনো সময় আছে।
তাই, কুরআন মানবতার জন্যে একটি মার্সি, একটি করুণা। এজন্য আল্লাহ বলেছেন- আর রাহমান, আল্লামাল কুরআন। পরম করুনাময়, যিনি কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন। কুরআন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার পক্ষ থেকে একটি দয়া হিসেবে আমাদের কাছে এসেছে। এটি মানুষকে বার বার মনে করিয়ে দেয় যে, মারা যাওয়ার পূর্বে তোমার হাতে এখনো সুযোগ আছে। মৃত্যুর পরে আর কোনো সুযোগ নেই।
- ড. আকরাম নদভী
- deepdeentv, surah Insan, part 01